তুমুল চাপ সত্ত্বেও বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ইমপিচ করায় সায় নেই ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের। মঙ্গলবার তাঁর ওই সিদ্ধান্তের কথা তিনি হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসিকে জানিয়ে দিয়েছেন। ২৫তম সংশোধনী জারি করে বিদায়ী প্রেসিডেন্টকে অপসারণ করার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল পেন্সকে। আত্মপক্ষ সমর্থন করে পেন্স বলেছেন, ‘‘প্রেসিডেন্টের মেয়াদের আর ৮ দিন বাকি। এখন আপনারা দাবি করছেন ক্যাবিনেট এবং আমি যেন ২৫তম অ্যামেন্ডমেন্ট স্বাগত জানাই। আমার মনে হয় না এই পদক্ষেপ জাতির পক্ষে লাভজনক হবে।’’“আমি মনে করি না যে দেশের ও সংবিধানের স্বার্থে এমন কোনও পদক্ষেপ নেওয়া যথোপযুক্ত।”
তাঁর অফিসের তরফে একটি চিঠি দিয়ে হাউস স্পিকারকে জানানো হয়েছে সেকথা। এদিকে, হাউসের পরিষদীয় নেতা-সহ তিন রিপাবলিকান সদস্য মঙ্গলবারই জানিয়েছেন যে, ট্রাম্পকে ইমপিচ করার পক্ষে তাঁরা। যেভাবে সমর্থকদের ক্যাপিটল হিলে হামলা চালানোর জন্য ট্রাম্প উস্কানি দিয়েছেন তা নিন্দনীয় বলেছেন রিপাবলিকানরা। সেই ঘটনায় অন্তত পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। পেন্সের অফিসের তরফে পেলোসিকে জানানো হয়েছে, নিয়ম মেনেই ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে। তাই মার্কিন কংগ্রেস এবং পেলোসিকে কোনওরকম বিভেদমূলক এবং হিংসার উদ্রেককারী পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকতে বলেছেন।
অন্য দিকে ট্রাম্পও জানিয়েছেন এই প্রক্রিয়া নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন নন মোটেও । টেক্সাসে অভিবাসন নীতি, মেক্সিকোর দেওয়াল নিয়ে কথা বলার সময় ইমপিচমেন্টের বিষয়টি তুলেছিলেন ট্রাম্প। সেখানে তিনি দাবি করেছেন, “২৫তম সংশোধনীতে আমার কোনও রকম ঝুঁকি নেই।” শুধু তাই নয়, ইমপিচমেন্ট নিয়ে বাইডেন প্রশাসনকে কার্যত সতর্কও করেছেন তিনি। বলেছেন, “ইমপিচমেন্টের গুজব দেশের ইতিহাসে বিদ্বেষপূর্ণ হতে বাধ্য এবং এটা এক ধরণের ডাইনী শিকার করার নামান্তর। অধিকাংশ লোকই এটা ভালো ভাবে নিবে না । এটা আমেরিকার জন্য অবশেষে ক্ষতিকর প্রভাব প্রতিফলিত করবে । বিশেষ করে এই সময়ে।’’
উল্লেখ্য নতুন বছরের শুরুতেই (৬ জানুয়ারি ) আমেরিকার ক্যাপিটলে হামলা চালায় ট্রাম্প সমর্থকরা। আমেরিকার জনপ্রতিনিধিদের কাজ করার অফিস ভাঙচুরের ঘটনার নিন্দা করেছে সারা বিশ্ব। সমালোচিত হয়েছেন ট্রাম্পও। তার পরই আমেরিকার নীতিনির্ধারকদের অভ্যন্তরে ট্রাম্পকে ইমপিচ করার দাবি ওঠে। সেই নিয়ে এখন জল্পনা তুঙ্গে। এই অবস্থাতেই ২০ জানুয়ারি আমেরিকার নতুন প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেবেন জো বাইডেন।
প্রসঙ্গত ভাইস প্রেসিডেন্টের ২৫ তম সংশোধনীতে সাড়া না পাওয়া কিন্তু ডেমোক্রেট শিবিরে আগে থেকেই অনুমান করা হচ্ছিলো l এখন দেখা যাক কি করেন হাউস রিপ্রেজেন্টেটিভ এবং ন্যান্সি পেলসী ? তাঁরা কি এখনো আগের প্রস্তুতি অনুযায়ী আগামীকাল কংগ্রেস অধিবেশনে ইমপিচ প্রস্তাব ভোটে তুলেন কি না l
এই পর্বের যবনিকা দেখার জন্য আগামীকাল পর্যন্ত টান টান উত্তেজনা বিরাজ করবে উভয় শিবিরে l
সাথে তাবৎ বিশ্ব নজর রাখছে আগামী কালকের ঘটনা প্রবাহের দিকে এবং কালকেই জানা যাবে কোন পথে আমেরিকা l
এস/সি/ইউ