সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্মানধীন ড্রেনে পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন বিশিষ্ট কবি, ছড়াকার ও সাবেক শিক্ষক নেতা আব্দুল বাসিত মোহাম্মদ। সিসিকের অরক্ষিত ড্রেনে পড়ে মারাত্বক আহত হয়ে দু’দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে না ফেরার দেশে চলে গেলেন সিলেটের প্রিয় মুখ কবি বাসিত। বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল ৬টার দিকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। সিলেটের সাহিত্যাঙ্গণের প্রিয়মুখ সদা হাস্যজ্জ্বোল, বন্ধুবৎসল ও সবার প্রিয় কবি-ছড়াকার বাসিত মোহাম্মদের মর্মান্তিক মৃত্যুতে লেখকদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে সিসিকের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে। এঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি করেছে সিসিক।
এ ঘটনায় ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন সিলেটের সচেতন মহল। ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে কবি কাশমির রেজা জৈন্তা বার্তাকে জানান, এ ঘটনার দায় কোনভাবে এড়াতে পাবে না সিলেট সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। দায়ীদের দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তি দাবী করে তিনি বলেন, নির্মানধীন ড্রেন এভাবে অরক্ষিত রেখে কাজ করা ঠিক হয়নি। মর্মান্তিক এ দূর্ঘটনার জন্য নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপুরন দিতে হবে। এদিকে, এ ঘটনায় সিলেট সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ তিন সদ্যসের কমিটি গঠন করেছে বলে জানিয়েছেন সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজ।
সিটি কর্পোরেশেনের অবহেলায় ঝরলো নগরীর জনপ্রিয় সাহিত্যেকের প্রাণ। বাংলাটিভির সাংবাদিক কাইয়ুম উল্লাস বলেন এটি একটি হত্যাকান্ড। সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজ, ঠিকাদারসহ সবাইকে এই হত্যাকান্ডের দায় নিতে হবে।
ইমজার সভাপতি মাহবুবুর রহমান রিপন বলেন, সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্বহীনতার চরম দৃষ্টান্ত স্থাপন হলো এই মৃত্যুর মাধ্যমে। এর আগেও নগরীতে উন্নয়ন কর্মকান্ডে আহত হয়েছেন পথচারী। এর দায় কোন অবস্থাতেই এড়াতে পারে না সিসিক।
জানা গেছে, গত সোমবার সন্ধ্যায় সিলেট নগরের জনবহুল আম্বরখানার হুরায়রা ম্যানশনের সামনে সিলেট সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক নির্মাণাধীন ড্রেনে পড়ে পেটে রড ঢুকে যায় কবি আব্দুল বাসিত মোহাম্মদের। এতে মারাত্মক আহত হন তিনি। সংকটাপন্ন অবস্থায় তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত দুদিন এমএজি ওসমানী হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকার পর বৃহস্পতিবার সকালে তিনি না ফেরার দেশে পাড়ি জমান।পরিবারের সদস্যরা জানান, বৃহস্পতিবার বাদ আসর চৌকিদেখি জামে মসজিদে জানাজা শেষে জানাজা শেষে তাকে সিলেট নগরের নয়াসড়কের মানিকপর কবরস্থানে দাফন করা হয় ।মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে এবং দুই মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
উল্লেখ্য, সিলেট নগরের কোথাও অক্ষত নেই। অলিগলি থেকে প্রধান সড়ক, সবখানেই চলছে খোঁড়াখুঁড়ি। অপরিকল্পিত এই খোঁড়াখুঁড়ির কারণে পুরো সিলেট শহর এখন যানজটের নগরী। বেড়েছে দুর্ভোগ। প্রভাব পড়েছে ব্যবসা বাণিজ্যেও। বছরব্যাপী সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) সব রাস্তায় একযোগে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করেছে। কোথাও রাস্তা, কোখাও কালভার্ট ও ড্রেন নির্মাণে খোঁড়াখুঁড়িতে সব রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে।
বিনা নোটিসে রাস্তা বিচ্ছিন্ন করার কারণে দুর্ভোগে পড়ছেন শহর ও শহরের বাইরে থেকে যানবাহন নিয়ে আসা লোকজন। বিকল্প পথে চলতে গিয়েও লোকজনকে প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। কারণ সবগুলো সড়কের কোথাও না কোথাও খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। ড্রেন বা গর্ত করে মাটি তুলে রাখা হয়েছে রাস্তায়। এতে করে রাস্তা সরো হয়ে গেছে।
এন/সি